পরিচ্ছন্ন স্টার্ট-আপ ( Startup )
স্টার্ট-আপ বলতে কম্পিউটার এবং অপারেটিং সিস্টেম চালু হওয়ার সময়টাকেই বুঝায়। কোন কম্পিউটারের উইন্ডোজের স্টার্ট-আপ যত দ্রুত হবে সেই কম্পিউটারের পারফরমেন্স যে ভালো হবে, রান করানোর সময় তা মোটামুটি ধারণা করা যায়। স্টার্ট-আপকে পরিচ্ছন্ন রাখা একটি কম্পিইটারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে না বুঝে স্টার্ট-আপে একগাদা সফটওয়্যার লোড করে দেন যা একদমই উচিত নয়। এমন কি প্রয়োজন ছাড়া এন্টিভাইরাস লোড করাও উচিত নয়। তবে যারা হরদম বাইরে থেকে সফটওয়্যার আনেন তাদের জন্য হয়তো প্রয়োজন হতে পারে কিন্তু বাকিদের তেমন প্রয়োজন নেই। StartUp
এ কোন কোন প্রোগ্রাম লোড হয়েছে তা জানার জন্য-
- Start মেনু থেকে Run-এ যান এবং msconfig টাইপ করে OK করুন। পর্দায় System Configuration Utility উইন্ডো আসবে।
- এবার উক্ত উইন্ডোর StartUp ট্যাবে ক্লিক করুন। এখানে আপনার কম্পিউটারের উইন্ডোজ স্টার্ট হওয়ার সময় যত প্রোগ্রাম লোড হয় তার একটি লিস্ট দেখতে পাবেন।
- প্রতিটি আইটেমের বাম দিকে একটি টিক দেওয়ার সুবিধা আছে যা অন বা অফ করা যেতে পারে।
- কোনটি কোন সফটওয়্যারের তা বুঝতে আইটেমের ফোল্ডার কী-গুলো লক্ষ্য করুন। যেমন- ম্যাকফির আইটেমের ফোল্ডার থেকে বুঝতে পারবেন এটি ম্যাকফি কি না।
- আপনি যদি পুরোপুরি একটি স্মুথ স্টার্ট চান তবে এখানে System Tray, Scan Registry, Explorer এই তিনটি ছাড়া বাকি সবগুলো চেক অফ করে দিন এবং OK করুন।
- অবশ্য কেউ যদি বিজয় স্টার্টে লোড হওয়ার জন্য রাখতে চান, তাবে বিজয় অন করে রাখুন। এতে একবার আপনার কম্পিউটার রিস্টার্ট হবে।
- লক্ষ্য করুন আপনার কম্পিউটার আগের চেয়ে অনেক দ্রুত স্টার্ট হবে।
স্টার্টআপে প্রোগ্রাম কমানো
আপনার স্টার্টআপে অসংখ্যা প্রোগ্রাম জমে গেছে, ফলে উইন্ডোজ বুট হতে অনেক সময় নেয় এবং টাস্কপেন উইন্ডোজ চালু অবস্থায় টাস্কবারের এক চতুর্থাংশ জায়গা দখল করে নেয়। এ অবস্থায় কীভাবে স্টার্টআপ থেকে প্রোগ্রাম কমিয়ে ফেলা যায় তা নিম্নে দেওয়া হলো-
- প্রথমেই দেখে নিন Start>Programs>Startup-এ বাড়তি কি কি প্রোগ্রাম আছে যা আপনি চান না।
- যেগুলো আপনি স্টার্টআপে রাখতে চান না তা রাইট ক্লিক করে Delete করে ফেলুন।
- এরপর Start মেনুর থেকে Run-এ যান এবং msconfig টাইপ করে OK করুন। পর্দায় System Configuration Utility উইন্ডো আসবে।
- এবার উক্ত উইন্ডোর StartUp ট্যাবে ক্লিক করে বিভিন্ন প্রোগ্রামের লিস্ট থেকে টিক চিহ্ন তুলে দিন।
- আপনি যদি কোন প্রোগ্রামের কি কাজ, তা বুঝতে না পারেন তবে তা না ধরাই উচিত। অবশ্যই C:\Windows কিংবা C:\Windows\ System ফোল্ডার থেকে চালানো কোনো প্রোগ্রাম বন্ধ না করাই উচিত।
- তবে C:\Windows\System\Kernel.exe ফাইল দেখলে তাকে অবশ্যই মোছা উচিত, কেননা এটিই Redlop.A ভাইরাস।
- এরপর OK করে উইন্ডোজ রিস্টার্ট করলেই স্টার্টআপের প্রোগ্রাম সংখ্যা অনেক কমে যাবে।
- অবশ্য অনেক প্রোগ্রামেরই টাস্কপেনের আইকনে ক্লিক করে Preferen- ces বা Option থেকে প্রোগ্রামটি স্টার্টআপে লোড হওয়া প্রতিহত করা যায়। কিন্তু সব প্রোগ্রামে যেহেতু এই অপশনগুলো থাকে না, তাই প্রথম পদ্ধতিটিই ব্যবহার করাই ভালো।
স্টার্ট-আপ বা শাট ডাউন-এ পছন্দের ছবি
যারা উইন্ডোজের নিয়মিত ব্যবহারকারী তারা নিশ্চয়ই প্রতিবারই স্টার্ট আপ আর শাট ডাউনের সময় উইন্ডোজের একই ধরনের স্ক্রীন দেখতে দেখতে বিরক্ত। ভাবছেন, কি ভাবে এই একঘেয়েমি স্টার্ট আপ এবং শাট ডাউন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আর ভাবনা নয়, আপনি ইচ্ছে করলেই আপনার পছন্দের যে কোন ছবিকে স্টার্ট-আপ বা শাট ডাউন-এ নিয়ে আসতে পারেন। শুধু আপনার পছন্দের ছবিটি হতে হবে একটি বিটম্যাপ ফাইল ( BMP এক্সটেনশনযুক্ত ) যার আয়তন হবে ৩০০Í৪২০ পিক্সেল। আপনি যে কোন ছবিকে পিকচার এডিটিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে একে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করে নিতে পারেন। এজন্য-
- প্রথমেই ফাইলটি C:\Windows ফোল্ডারে রাখুন।
- এখন আপনি যদি ফাইলটিকে স্টার্ট-আপে দেখতে চান তাহলে একে Logo.sys নামে রিনেম করুন।
- আর যদি শাট ডাউনে wait ম্যাসেজের ( এ ম্যাসেজটি অবশ্য আজ- কালকার দ্রুত গতি সম্পন্ন মেশিনগুলোতে দেখা যায় না ) পরিবর্তে দেখতে চান তাহলে নাম দিন Logow.sys .
- আর যদি It is now safe to turn off your computer-এর বদলে দেখতে চান তাহলে নাম দিন Logow.sys .
- এ নামের ফাইলগুলো অবশ্য আগেই উইন্ডোর ডিরেক্টরিতে থাকবে। সেক্ষেত্রে ফাইলগুলো সরিয়ে অন্য কোন ফোল্ডারে রাখুন।
হারানো স্টার্ট-আপ ফাইল
স্টার্ট-আপের কোন ফাইল হারিয়ে গেলে বা ডিলিট হয়ে গেলে উইন্ডোজ শুরম্ন হওয়ার সময় ম্যাসেজ প্রদর্শন করে। স্টার্ট-আপ থেকে এই ফাইল ডিলিট করার জন্য-
- Start থেকে Run-এ গিয়ে msconfig লিখে OK করম্নন। পর্দায় System Condiguration Utility উইন্ডো আসবে।
- এবার উক্ত উইন্ডোর Start up ট্যাবে ক্লিক করে যে ফাইলটি হারিয়ে গিয়াছে বা ডিলিট হয়েছে সেই ফাইলটির পাশের চেক বক্সে অনচেক করে দিয়ে Apply করে OK করম্নন।
স্টার্টআপ থেকে বাদ দিন
অনেক প্রোগ্রাম Startup বা Win.ini-তে না থাকলেও প্রতিবার কম্পিউটার চালু হওয়ার সময় Run করে। এভাবে কোনো ভাইরাসও নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারে। এসব অনাকাঙ্ক্ষিত প্রোগ্রাম বাদ দেবার জন্য-
- Start মেনু থেকে Run-এ যান এবং regedit লিখে OK করুন। পর্দায় Registry Editor চালু হবে।
- এবার HKEY_LOCAL_MACHINE\Software\Microsoft\
Windows\CurrentVersion\Run-এ যান।
৩. এখন যে প্রোগ্রামগুলো Startup-এ লোড হোক তা চান না, সেই সব প্রোগ্রামের নাম ডিলিট করুন।
স্টার্টআপ-এ পছন্দের প্রোগ্রাম যোগ করা
আপনি যদি কম্পিউটার চালু হওয়ার সময় পছন্দের কোন প্রোগ্রাম চালু করতে চান, তাহলে স্টার্টআপে ঐ প্রোগ্রাম যোগ করে দিন। এজন্য-
- Start মেনু থেকে Startup-এ গিয়ে যে প্রোগ্রাম চালাতে চান, সেটি All Programs থেকে ড্রাগ করে এনে Startup-এ ছেড়ে দিন।
- তাহলে কম্পিউটার চালু করলেই আপনার প্রয়োজনীয় প্রোগ্রামটিও চালু হয়ে যাবে।
নোট: আপনি ইচ্ছা করলে কোন পছন্দনীয় গান Startup-এ রাখতে পারেন। কম্পিউটার চালুর সংগে সংগেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার পছন্দের গান শুরম্ন হয়ে যাবে। এজন্য- শুধু গানটি Copy করে Startup মেনুতে Paste করে দিলেই হবে।
বাইপাস করুন স্টার্টআপ এপ্লিকেশনগুলো
আমাদের প্রায় সবার কম্পিউটারেই বুটিং পরবর্তী ডেস্কটপ আসার পর কিছু কিছু এপ্লিকেশন লোড হয়। যেগুলোকে স্টার্টআপ এপ্লিকেশন বলা হয়। এই স্টার্টআপ এপ্লিকেশনগুলো লোড হওয়ার জন্য কিছু কম্পিউটার রিসোর্সের প্রয়োজন হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে ডেস্কটপে আসা কিছুটা বিলম্বিত হয়, যা অনেকের কাছে খুবই বিরক্তিকর। কিন্তু চাইলেই এই বিরক্তিকর অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
আপনি উইন্ডোজ স্টার্ট করার পর যদি চান যে আপনার র্স্টাটআপ ফোল্ডারের প্রোগ্রামগুলোকে (উইন্ডোজ চালুর সময় যে প্রোগ্রামগুলো চলে ) বাইপাস করবেন, তাহলে যা করতে হবে তা হলো-
· উইন্ডোজ চালুর পর ডেস্কটপ আসার পূর্বে কী-বোর্ড থেকে Ctrl কী চেপে ধরে রাখুর এবং ডেস্কটপ আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
· তাহলেই দেখবেন আপনার ডেস্কটপের সকল আইকন এসে গেছে কিন্তু আপনার স্টার্টআপ ফোল্ডারের প্রোগ্রামগুলো চালু হয় নি।
আর যদি চান এপ্লিকেশনগুলো কখনোই লোড হবে না, তার জন্য যা করুনীয় তা হলো-
- My Computer>C:\ ড্রাইভ>Documents and Settings> All Users>Start Menu>Programs-এ ক্লিক করুন। এখানে Startup নামে একটি ফোল্ডার পাবেন (অনেক সময় Startup ফাইল হিডেন থাকতে পারে)।
- এবার Startup ফোল্ডার ওপেন করুন এবং দেখুন যে ফাইলের প্রয়োজন নেই, তা ডিলিট করুন।